🪷 দুপুরের খাবার এ ৫টি মজাদার রেসিপি যা আপনাকে পছন্দ হবে –📌📌📌📌📌
দুপুরের খাবার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ, যা শুধু ক্ষুধাই মেটায় না—একটি পরিপূর্ণ ও সুস্বাদু খাবার সারা দিনের কাজের শক্তিও জোগায়। কিন্তু প্রতিদিন একঘেয়ে মেনু কারই বা ভালো লাগে? তাই আজ তোমার জন্য নিয়ে এসেছি ৫টি মজাদার ও ভিন্ন স্বাদের দুপুরের খাবার রেসিপি, যা খুব সহজে ঘরেই তৈরি করা যায়। এসব পদ শুধু মুখরোচকই নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর—পরিবারের সবাই নিশ্চয়ই খুশি হবে এমন নতুন স্বাদের রান্নায়!
🔸🔸 মাছের ডিম ও করল্লার সেরা ভাজি

🔸🔸
🌼 করল্লা এবং মাছের ডিমের সংমিশ্রণে তৈরি এই ভাজি পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু। করল্লার হালকা তিক্ততা এবং মাছের ডিমের মিষ্টি স্বাদ মিলে এক অনন্য ভোজ তৈরি হয়। এটি ভাতের সাথে খেতে খুবই ভালো লাগে।
উপকরণঃ
মাছের ডিম: ২৫০ গ্রাম
করল্লা: ২টি (পাতলা করে কাটা)
পেঁয়াজ কুচি: ১/২ কাপ
কাঁচা মরিচ: ৪-৫টি (কাটা)
হলুদ গুঁড়ো: ১/২ চা চামচ
লাল মরিচ গুঁড়ো: ১/২ চা চামচ
লবণ: স্বাদ অনুযায়ী
সরষের তেল: ৩ টেবিল চামচ
ধনেপাতা: সাজানোর জন্য
প্রস্তুত প্রণালীঃ
- মাছের ডিম প্রস্তুত করুন:
মাছের ডিম ভাল করে ধুয়ে, কিছু লবণ এবং হলুদ মাখিয়ে রেখে দিন। - করল্লা প্রস্তুত করা:
করল্লা ছোট ছোট স্লাইস করে কাটুন। পরে, ১০ মিনিট লবণ দিয়ে রেখে ধুয়ে নিন। - করল্লা ভাজুন:
গরম তেলে করল্লা ভেজে নিন। সোনালি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন এবং তারপর তুলে রাখুন। - মাছের ডিম ভাজুন:
একই তেলে মাছের ডিম ভাজুন। পেঁয়াজ কুচি ও কাঁচা মরিচ দিয়ে নেড়ে ভাজুন। - মশলা যোগ করুন:
হলুদ গুঁড়ো, লাল মরিচ গুঁড়ো এবং লবণ যোগ করে ভালভাবে মেশান। - করল্লা মিশিয়ে দিন:
ভাজা করল্লা ডিমের সঙ্গে মিশিয়ে দিন। ৫ মিনিট ধরে ভাজুন যাতে সব মশলা মিশে যায়। - পরিবেশন করুন:
গরম গরম ভাজা করল্লা-মাছের ডিম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন। ধনেপাতা দিয়ে সাজিয়ে মজা নিন।
টিপসঃ
করল্লার তিক্ততা কমাতে, পাতলা করে কেটে লবণ পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে পারেন।
সরষের তেলের পরিবর্তে সয়াবিন তেলও ব্যবহার করতে পারেন।
মাছের ডিম বেশি ভাজবেন না, যাতে সেগুলি শক্ত না হয়ে যায়।
পুঁটি মাছ ভুনা (ঘরোয়া স্বাদের ঝাল মাছ)
পুঁটি মাছ দিয়ে বানানো এই ভুনা পদটি একেবারে সাদামাটা অথচ অতুলনীয় স্বাদের। খুব সহজ উপায়ে অল্প কিছু মশলা ব্যবহার করে তৈরি করা যায় এই রেসিপি।
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
পুঁটি মাছ: ২৫০ গ্রাম
পেঁয়াজ কুচি: ১ কাপ
রসুন বাটা: ১ চা চামচ
আদা বাটা: ১/২ চা চামচ
হলুদ গুঁড়ো: ১/২ চা চামচ
লাল মরিচ গুঁড়ো: ১ চা চামচ
ধনে গুঁড়ো: ১ চা চামচ
জিরা গুঁড়ো: ১/২ চা চামচ
লবণ: স্বাদমতো
সরষের তেল: ৩ টেবিল চামচ
কাঁচা মরিচ: ৪-৫টি
রান্নার ধাপ:
1. মাছ ধুয়ে হলুদ ও লবণ মেখে ১০ মিনিট রেখে দাও।
2. গরম তেলে মাছগুলো হালকা করে ভেজে তুলে রাখো।
3. একই তেলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভেজে নাও, এরপর আদা, রসুন, মশলা গুঁড়ো দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে নাও।
4. ভাজা মাছ মশলার মধ্যে দিয়ে খুব হালকাভাবে মিশাও, যাতে ভেঙে না যায়।
5. ঢেকে ৫-৭ মিনিট রান্না করে শেষে কাঁচা মরিচ দিয়ে ঢেকে রাখো।
6. গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করো।
নতুনদের জন্য পরামর্শ:
মাছ নরম, তাই রান্নার সময় সাবধানে নাড়বে।
ঝোল পছন্দ হলে অল্প পানি দিয়ে রান্না করতে পারো।
তেলের পরিমাণ একটু বেশি হলে স্বাদ আরও ভালো হয়।
৩. টেংরা মাছের ঝোল

একটি হালকা ও সুস্বাদু ঝোলের রেসিপি যা দুপুরের ভাতের সাথে দারুণ চলে।
উপকরণ:
টেংরা মাছ, পেঁয়াজ কুচি, রসুন-আদা বাটা, টমেটো, কাঁচা মরিচ, মসলা, ধনেপাতা
প্রণালী:
মাছ লবণ-হলুদ মাখিয়ে হালকা ভেজে রাখো। পেঁয়াজ ও বাটা মসলা কষিয়ে টমেটো দিয়ে ঝোল তৈরি করো। তারপর মাছ দিয়ে ঢেকে রাখো। শেষে ধনেপাতা ছড়িয়ে দাও।
পুষ্টি টিপস:
টেংরা মাছ প্রোটিনসমৃদ্ধ ও সহজপাচ্য। টমেটোতে থাকা লাইকোপেন হজমে সাহায্য করে।
—
৪. শোল মাছের কালিয়া

ঘন মশলাদার ঝোলে রান্না করা এই রেসিপিটি উৎসবের মেন্যুতেও যোগ করা যায়।
উপকরণ:
শোল মাছ, পেঁয়াজ-আদা-রসুন বাটা, টমেটো, গরম মশলা, কাঁচা মরিচ, তেল
প্রণালী:
মাছ ভেজে নিয়ে পেঁয়াজসহ মসলা কষাও। টমেটো বাটা দিয়ে কষে নাও, ঝোল তৈরি করে মাছ দিয়ে রান্না করো। শেষে গরম মশলা ও ধনেপাতা।
টিপস:
শোল মাছ ভেঙে যেতে পারে, তাই সাবধানে নাড়াচাড়া করো। ঘন ঝোল পেতে চাইলে একটু টক দই বা আলু দিতে পারো।
—
৫. বড়ি দিয়ে মাছের ঝোল

বড়ির ঝোল মানেই বাড়ির পুরনো স্বাদের ফিরে আসা। মাছ ও বড়ির একসাথে রসাল সংমিশ্রণ।
উপকরণ:
রুই/কাতলা মাছ, বড়ি, পেঁয়াজ, রসুন-আদা, মসলা, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতা
প্রণালী:
বড়ি ভেজে তুলে রাখো। মাছ ভেজে পেঁয়াজসহ বাকি মসলা কষাও। ঝোল তৈরি করে মাছ ও বড়ি দিয়ে রান্না করো। কাঁচা মরিচ ও ধনেপাতা দিয়ে পরিবেশন করো।
টিপস:
বড়ি আগে ভেজে দিলে ঝোলে দিলে আর ভেঙে যাবে না। চাইলেই একদিন পুরোনো মাছ ব্যবহার করা যায়।
উপসংহার :
এই ৫টি মজাদার দুপুরের খাবার রেসিপি শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর। প্রতিদিনের খাবারে একটু ভিন্নতা আনতে চাইলে এসব পদ হতে পারে দারুণ একটি সংযোজন। সহজ উপকরণে দ্রুত তৈরি করা যায় বলেই ব্যস্ত সময়েও তুমি রান্না করে নিতে পারবে মজাদার খাবার। তাহলে আর দেরি কেন? আজই ট্রাই করো রেসিপিগুলো, আর তোমার পরিবারের হাসিমুখে খাওয়ার আনন্দ ভাগ করে নাও!
2 thoughts on “দুপুরের খাবার এ ৫টি মজাদার রেসিপি”
Comments are closed.