🌟 চট্টগ্রামের স্পেশাল নারিকেলের কোরার সাথে মুরগির ঝাল ঝোল রেসিপি
✨ ভূমিকা: স্বাদের সোনালী গল্প
চট্টগ্রামের খাবারের মধ্যে নারিকেলের কোরার সাথে ঝাল ঝোল একেবারে ঘরের স্বাদ। গ্রামীণ অঞ্চলের রান্না ঘর থেকে এই স্বাদ এসেছে শহুরে দাওয়াতের মেনুতে। সরিষার তেল, কাঁচা মরিচ, আর তাজা নারিকেলের কোরার মিশেলে মুরগির মাংস একেবারে আলাদা ঘ্রাণ ও স্বাদ পায়।
চল, শিখে নেই চট্টগ্রামের এই ইউনিক মুরগির ঝাল ঝোল রেসিপি, যা মন মাতিয়ে দেবে!
📝 প্রয়োজনীয় উপকরণ (৪-৬ জনের জন্য)
- দেশি মুরগি (টুকরো করা) – ১ কেজি
- নারিকেলের কোরানো শাঁস – ১ কাপ
- সরিষার তেল – ১/২ কাপ
- পেঁয়াজ কুচি – ২ কাপ
- আদা বাটা – ১ টেবিল চামচ
- রসুন বাটা – ১ টেবিল চামচ
- শুকনা মরিচ গুঁড়ো – ২ টেবিল চামচ
- হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
- ধনিয়া গুঁড়ো – ১ চা চামচ
- জিরা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
- লবণ – স্বাদমতো
- কাঁচা মরিচ – ৪-৫টি
- পানি – মুরগি সেদ্ধ করার জন্য
- ধনেপাতা কুচি – পরিবেশনের জন্য
🍳 ধাপে ধাপে রান্নার প্রক্রিয়া
ধাপ ১: মুরগি ধুয়ে রাখো
মুরগির টুকরোগুলো ভালোভাবে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখো। এতে ঝোল পরিষ্কার আর সুগন্ধ হবে।
ধাপ ২: তেল গরম করে পেঁয়াজ ভাজা
বড় কড়াইতে সরিষার তেল গরম করো। পেঁয়াজ কুচি দিয়ে হালকা বাদামি হওয়া পর্যন্ত ভাজো। এতে মিষ্টি গন্ধ আসবে।
ধাপ ৩: মশলা কষানো
- পেঁয়াজের সাথে আদা-রসুন বাটা মেশাও।
- শুকনা মরিচ, ধনিয়া, জিরা, হলুদ, লবণ দিয়ে ৩-৪ মিনিট কষাও।
- এবার নারিকেলের কোরানো শাঁস যোগ করো। ৫ মিনিট নাড়ো, যেন কোরার মিষ্টি গন্ধ বের হয়।
ধাপ ৪: মুরগি মেশানো
মশলার মধ্যে মুরগি দিয়ে ১০-১৫ মিনিট কষাও। মুরগির রঙ লালচে হবে আর মশলা মিশে যাবে।
ধাপ ৫: পানি দিয়ে রান্না
- প্রয়োজন মতো গরম পানি দিয়ে ঢেকে রাখো।
- মুরগি সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করো।
ধাপ ৬: পরিবেশন
মুরগির ঝোল ঘন হলে কাঁচা মরিচ ফালি আর ধনেপাতা কুচি দিয়ে পরিবেশন করো। সাদা ভাত, পরোটা, নানরুটি—যেকোনো কিছুর সাথে উপভোগ্য।
🌿 টিপস (Tips)
১. নারিকেলের কোরার মিষ্টি স্বাদ ঝালের সাথে ভারসাম্য রাখে।
২.সরিষার তেল মশলা আর ঘ্রাণে ভিন্নতা আনে।
৩. মশলা কষানোতে ধৈর্য ধরো—
🌟 নারিকেলের কোরার মুরগির ঝাল ঝোলের বিশেষত্ব
- নারিকেলের কোরা দিয়ে মিষ্টি আর ঝালের অপূর্ব মিশ্রণ।
- সরিষার তেলে ভাজা মশলা, যা ঘ্রাণ আর স্বাদে অতুলনীয়।
- ঘন, লালচে ঝোল যা মশলা আর নারিকেলের সমন্বয়ে তৈরি।
- চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবার, উৎসব ও অতিথি আপ্যায়নের প্রতীক।
নারিকেলের কোরার সাথে মুরগির ঝাল ঝোল এর ঐতিহ্য হলো –
১.চট্টগ্রামের খাবার সংস্কৃতি ও আতিথেয়তার প্রতীক।
২.নারিকেল, ঝাল মশলা আর সরিষার তেলে রান্না – যা চট্টগ্রামের রন্ধনশৈলীর বৈশিষ্ট্য।
৩.উৎসব, অতিথি আপ্যায়ন বা বিশেষ অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়।
৪.পুরনো দিনের ঐতিহ্য মেনে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে আসছে।
🥥 নারিকেলের কোরার সাথে মরগির ঝাল ঝোল এর পুষ্টিগুণ (প্রতি ১০০ গ্রাম)
উপাদান | পরিমাণ |
---|---|
🔥 ক্যালোরি | ২০০ kcal |
🥩 প্রোটিন | ১৫ গ্রাম |
🧈 চর্বি | ১৪ গ্রাম |
🍚 কার্বোহাইড্রেট | ৩-৪ গ্রাম |
🌿 আয়রন | ১০% |
🌿 ভিটামিন B12 | ২০% |
Question
প্রশ্ন: দেশি মুরগি না পেলে ব্রয়লার ব্যবহার করা যাবে?
উত্তর: অবশ্যই, তবে দেশি মুরগির স্বাদ আলাদা।
প্রশ্ন: নারিকেলের শাঁস বাদ দিলে হবে?
উত্তর: শাঁস না দিলে এই ইউনিক স্বাদ আসবে না। তবে অন্য মশলা দিয়ে ঝোল বানানো যাবে।
🌍 উপসংহার
চট্টগ্রামের এই নারিকেলের কোরার সাথে মুরগির ঝাল ঝোল শুধু একটি রেসিপি নয়, বরং ঘরোয়া ঐতিহ্যের স্বাদ। সহজ উপকরণ আর স্পেশাল রান্নার কৌশলে এই পদ সবার মন জয় করবে।